গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
সংশ্লিষ্ট দল ও জোটগুলো পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিএনপি; সাত-দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে; ৪-দলীয় জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বপ্রান্তে; ১২-দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে; ১২-দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পুরানা পল্টন প্রীতম হোটেলের বিপরীতে; কর্নেল (অব) ড. অলি আহমেদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) পূর্ব পান্থপথ এবং মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম তাদের আরামবাগস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অভিন্ন সময়ে এ কর্মসূচি পালন করবে। এ ছাড়া ১৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সমমনা গণতান্ত্রিক জোট ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও এ যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
গতকাল রাতে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, আজকের এ কর্মসূচি সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দল ও সংগঠনগুলো। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে চায় না। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট হতে পারে না- এটি বিগত সব নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে ১০ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্র মেরামতেও ঘোষণা করা হয়েছে ২৭ দফা। ১০ দফা ও ২৭ দফা দেশের মানুষ সমর্থন করেছে। বিএনপির প্রতি দেশের মানুষের সমর্থন আছে। আমরা মনে করি, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের বিদায় ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সুষ্ঠু ভোটে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
নয়াপল্টনস্থ কার্যালয়ের সামনের সড়কের একপাশে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা বলেন। তার সঙ্গে দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ছিলেন। জাহিদ বলেন, আমরা সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। পুলিশের অনুমতিও আমরা পেয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব। ডিএমপির কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে এই কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছে। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।
জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, ‘বিএনপি অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। আমরা আশা করি, তারা সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি করবেন। যদি কোনো বিশৃঙ্খলা করে তাহলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
আজকের অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে আজ ভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ঢাকাসহ সারাদেশের বিভাগীয় শহরে আজ তারা আলোচনাসভা করবে। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক বিবৃতিতে জানান, বুধবার (আজ) ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে তারা। এ জন্য দেশের সব মহানগরী শাখায় আলোচনাসভা করা হবে।
গণঅবস্থান শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কার্যত সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে ১০টি বিভাগে এই কর্মসূচি হবে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস। অন্য ৯ বিভাগের গণঅবস্থান কর্মসূচিতে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে সিলেটে গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আবদুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান। এ ছাড়া কেন্দ্র গঠিত সমন্বয় টিমের দলনেতা, সমন্বয়কারী, সমন্বয় সহযোগীসহ বিভাগের অন্তর্গত জেলাসমূহের অধিবাসী কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ট, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক, সদস্য, জেলা, উপজেলা ও মহানগরসহ অন্য নেতৃবৃন্দকে স্ব-স্ব বিভাগীয় সদরের কর্মসূচিতে অংশ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।