ছবি:টোকিও বাংলা নিউজ
আমরা একেকজন একেক এলাকায় আলাদা আলাদা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। প্রত্যেক বাবা মা-ই কোনো না কোনো ধর্মে বিশ্বাসী। তাদের এই ধর্ম বিশ্বাসের কারণে আমরাও একেকজন একেক ধর্মের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। কালে ভদ্রে কেউ হয়তো সব কিছু বোঝার পর ধর্মান্তরিত হয়েছেন বা বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছেন। এখানে আমি নির্দিষ্ট কোনো ধর্ম বিশ্বাসীদের নয়, বরং হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বীদের কথাই বুঝাতে চেয়েছি। আমাদের ধর্ম বিশ্বাসটাও কিন্তু হয়েছে বাবা-মায়েদেরই ধর্ম বিশ্বাসের কারণে।
বয়স হবার সাথে সাথে ধর্ম বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের কারণে বা জ্ঞান হবার পর সেই ধর্ম শিক্ষা নেবার কারণে কিছুটা হলেও নিজের মতো করে ধর্মের কথা বলতে শুরু করেছি। আমি যতোটা জানি বা বুঝি, পৃথিবীর কোনো ধর্মই মানুষকে খারাপ কোনো কিছু শিক্ষা দেয়না বা খারাপ পথে পরিচিলিত হতে বলে না। তারপরেও আমরা অনেকে মুখে ধর্মের কথা বলি ঠিকই অথচ বাস্তবে করি অধর্মের কাজ। যা ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক। এই কারণে সমাজে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সহাবস্থানের পরিবেশ - পারিপার্শ্বিকতা ক্রমেই হয়ে উঠছে অসহনীয়। খেয়াল করলে দেখা যায়, ধর্ম বিশ্বাসী নামধারী উগ্রপন্থীদের মধ্যেই ঘটে ধর্ম নিয়ে যতো সংঘর্ষ বা দাঙ্গা। অবিশ্বাসীদের মধ্যে তা হতে দেখি না।
প্রতিটি ধর্ম গ্রন্থেই সেই ধর্মের অনুসারীদের প্রত্যেককে ভালো থাকার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ভালো পথে চলার জন্য। এমনকি চেনা জানা, আত্মীয়-অনাত্মীয়, প্রতিবেশীদের ভালো রাখার কথাও বলা হয়েছে সকল ধর্ম গ্রন্থে। ছোটবেলা ধর্ম গ্রন্থে পড়েছি, এ জীবনে সমাজের কোনো লোক নানা কারণে অনেক অন্যায় বা খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। খারাপ কাজ করতে করতে এমন এক সময় আসে যখন সে তার নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং ভুল কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়। কিংবা মনের অজান্তে হলেও তার শেষ জীবনে বা চলার পথে এমন একটি ভালো কাজ যায় যার জন্য সৃষ্টিকর্তা সেই কাজে খুশি হয়ে অতীতের সকল পাপ কর্মের জন্য ক্ষমা করে দেন। ফলে সেই ক্ষমার বদৌলতে হয়ে যান সাধু বা সাধ্বী। এমন উদাহরণের কথা শুনেছি ছোট সময় ধর্ম শিক্ষা ক্লাসে।
যদিও এসব বিষয় ধর্ম শিক্ষা ক্লাসে শিক্ষকদের মুখে শোনা গল্প মাত্র; যার সত্যতা নিয়ে আমি কখনোও ভাবিনি। তারপরেও নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে ন্যায় - অন্যায় বিচারের ক্ষমতা আছে বলেই জীবনে চলার পথে এসব উদাহরণকে আমরা সময় সময় রেফারেন্স হিসেবে জীবনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।
আমি আমার আজকের এই লেখাটি লিখছি একান্তই নিজের বিবেক বুদ্ধি আর দায়িত্ব থেকে। লেখাটি পড়ে কে কি মনে করবেন জানি না। তবে বাংলাদেশ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয় অনুরোধ, আপনি নিজেই বলেছেন শুনেছি, "রাখে আল্লাহ মারে কে?" এটা যদি আপনার মনে কথা বা বিশ্বাসের স্থান থেকে বলে থাকেন, তাহলে বলতে চাই- অতীতে দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বি এন পি'র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরীক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে আপনি সেই ধর্মে শেখা মানুষকে ক্ষমা করার বিষটিকে প্রাধান্য দিতে পারেন।
আমরা সবকিছুই সহজে ভুলে যাবার মতো জাতি হিসেবে স্বীকৃত হলেও আমার বিশ্বাস দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় থাকাকালে সংগঠিত ২১ শে আগষ্ট এর আগে ও পরের ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কবির ভাষায় যদি বলি, "স্বর্গ নরক কে বলে তা বহুদূর"? স্বর্গ নরক মৃত্যুর পর আছে কি নেই, থাকলেও সেখানের বাসিন্দা আমরা কে হতে পারবো আর কে হতে পারবো না তা কেউই বলতে পারি না। তবে এই পৃথিবীতেই সেটা নির্ধারণের সুন্দর সুযোগ আর পরিবেশ আছে। সেটা চিন্তা করলেও মনে করি, "বেগম জিয়া তার অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালে বুঝে হোক আর না বুঝে হোক তাঁর সকল ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই যদি হয়, মানবিক কারণে হলেও আপনি আপনার মহানুভবতার প্রমাণ দিতে পারেন বর্তমান সময়ে" বিশেষ করে বর্তমানে আলোচিত বিষয়, বেগম জিয়ার সু-চিকিৎসার বিষয়টি আমলে নিয়ে।
এই মূহুর্তে আপনি বেগম খালেদা জিয়ার ভক্ত ও সমর্থক গোষ্ঠির আবেদন গ্রহন করে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করলে, ২১ শে আগষ্টের গ্রেনেড হামলার মতো আর কোন ঘটনার পুণরাবৃত্তি দেশে ঘটাবে বলে মনে হয় না। তাই জননেত্রী হিসেবে আপনার কাছে অনুরোধ সার্বিক বিষয় চিন্তা করে তাঁকে সব ভুলের জন্য ক্ষমা করে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার্থে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বা আওয়ামী লীগের বিন্দু মাত্র ক্ষতি হবে বলে মনে করি না। বরং এতে আপনার ভালো হবে।
সব শেষে সৃষ্টিকর্তা আপনার মঙ্গল করুন। সেই প্রত্যাশা করি।
আর এ/আর এ এস