ছবি:টোকিও বাংলা নিউজ
জাপান আসার আগে থেকেই, বলতে গেলে দেশে ছাত্রজীবন থেকেই আমার লেখালেখি শুরু। জাপান আসার পর ভেবেছিলাম, এই জাপানেও সেই লেখালেখি ধরে রাখবো। আর সেই ভাবনা থেকেই জাপানে আমার সাংবাদিকতা পেশাকে পোক্ত করার চিন্তা করেছিলাম শুরু থেকেই। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, অনেক চেষ্টা করেও ধরে রাখা সম্ভব হয়নি আমার এই সাংবাদিকতা। জাপানে দীর্ঘদিন আমি এই সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত থাকার পরেও নানা কারণে বাধ্য হয়েছি এই সাংবাদিকতা ছেড়ে দিতে। সাংবাদিকতা ছাড়লেও লেখালেখি ছাড়িনি। যে কারণে এখন জাপানে আমার পরিচয় হয়ে গেলো, একজন লেখক। ফেসবুকের বদৌলতে অনেকেই আমার সেই পরিচয় ইতোমধ্যে জেনে গেছে। বলতে পারি, আমি অনেক কষ্টের মধ্যেও জাপানের মতো দেশে লেখালেখি ধরে রেখেছি আর সেই কারণেই জাপান থেকে প্রকাশিত নতুন নিউজ পোর্টাল "টোকিও বাংলা নিউজ ডট কম" এর সম্পাদক আমার কাছে কিছুদিন ধরে লেখা চাইছিলো। কিন্তু কি লেখা দেবো সেটা ভাবতে ভাবতেই কয়েকদিন পেরিয়ে গেলো। কারণ, সামনে দেশে "একুশে বই মেলা" আসছে। সেই মেলা উপলক্ষে কয়েকজন প্রকাশক আমার লেখার স্ক্রিপ্ট বা পান্ডুলিপি চাইছেন। এসময় সবাইকে লেখা দিয়ে খুশি করা না গেলেও যাদেরকে আমার লেখা দিবো বলেছি, তাদের তো সময় মতো আমার লেখা দিতেই হবে আর সেই লেখা নিজে দেখে ঠিক করে নির্ভুল করার প্রবণতা থেকে চালিয়ে যাচ্ছি লেখা সম্পাদনার কাজ। এই জন্যই বর্তমানে আমি অনেক ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মধ্যেও যে লেখা রেডি করেছি টোকিও বাংলা নিউজ পোর্টালের জন্য, সেটি আমার জন্য অনেক কিছু। জাপান থেকে বর্তমানে প্রকাশিত বেশ কয়টি পোর্টালের নাম আমার জানা রয়েছে। যে সব পোর্টালের প্রকাশক - সম্পাদকগণ কেবল সম্পাদক হবার জন্যই পোর্টাল করছেন। এছাড়া তাদের অন্য আর কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে আমার জানা নেই। থাকলে থাকতেও পারে, তবে আমার কাছে তাদের সেই উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়। আবার এটাও দেখেছি, কেউ কেউ সাংবাদিকতার নামে অসাংবাদিকতা করে আসছে শুরু থেকেই, যার জন্য মানুষ এদেরকে সাংবাদিক না বলে বলছে সাংঘাতিকতা। তাদের সাথে আমার তেমন ঘনিষ্ঠভাবে কখনো মেলামেশা করা বা কথা হয়নি। তবে দূর থেকে যতোটা দেখেছি, তাদের ব্যক্তি জীবন আর পেশার সাথে জাপানে এই সাংবাদিকতা করার নাম করে পোর্টাল চালানোর কোনো মিল খুঁজে পাইনি। সেই হিসেবে টোকিও বাংলা নিউজ পোর্টালটিকে আমার কাছে এরই মধ্যে অনেকটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে শুরুর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই। এই জন্যই আমার লেখা দেওয়া। বলে রাখা ভালো, জাপানের প্রথম অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল ছিল আমার। যার নাম ছিল বিবেকবার্তা। এই পোর্টালের উপর ভিত্তি করেই জাপানে আমি আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান "বিবেক কোঃ লিঃ," প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম। অনেক সময় এবং অর্থ আমি ইনভেস্ট করেছি এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত বিবেকবার্তা-র পিছনে। ফল হয়েছে শূন্য। হতে পারে সেটা আমারই ব্যর্থতার কারণে হয়েছে। টোকিওতে একসময় বিবেকবার্তার নিজস্ব অফিস ছিল, যা এখন কেবলই স্মৃতি। এখন আর তার কোনো কিছুই নেই। তবে আছে শুধু নামটি, "বিবেক" আর "বিবেকবার্তা"। সেই নামটি এখনো ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি নানা ভাবে। যে কারণে বিবেকবার্তা এখন আর নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ না করে হয়ে যাচ্ছে সাহিত্য বিষয়ক পোর্টাল। পোর্টাল দুটির বিষয়ের কথা চিন্তুা করলেই বোঝা যাবে, বিবেকবার্তার সাথে টোকিও বাংলা নিউজ সাংঘর্ষিক নয়। সুতরাং এতে লেখা দিতেও আমার কোনো আপত্তি থাকার কথা নয় মনে করে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি টোকিও বাংলা নিউজ পোর্টালের জন্য লেখা রেডি করতে। আশা করি এর ধারাবাহিকতা আমি বজায় রাখতে পারবো। যারা আমার এই লেখা পড়ছেন, তাদের সকলের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, এই পোর্টালে আমার পরবর্তী লেখা আপনি পড়বেন কি পড়বেন না, সেটা একান্তই আপনার নিজস্ব বিষয়। তবে অনুরোধ করবো, টোকিও বাংলা নিউজ পোর্টালের সাথে থাকার জন্য। প্রবাসে বসে এতো কষ্ট করার পরেও পোর্টালের সম্পাদক আমার অনুজ, আর এ সুজন যে, বাংলা - বাঙালি - বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছেন, এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তার এই সুন্দর প্রয়াশের সফলতা অবশ্যই আমি কামনা করছি। সে সাথে আপনাদেরকেও অনুরোধ করছি তার সফলতার পিছনে যেন আপনারও অংশ গ্রহণ থাকেন, সেই চেষ্টা করতে। যদি সত্যিকার অর্থে জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির কল্যানের কথা চিন্তা করেই যদি এই পোর্টালের যাত্রা শুরু হয়ে থাকে এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে অবশ্যই আমি এর সাথে অন্তত লেখা দিয়ে হলেও সাথে থাকার ইচ্ছে ব্যক্ত করছি। শুভ কামনা।
পি আর প্ল্যাসিড
জাপান প্রবাসী সাংবাদিক-লেখক।
আর সি