Apan Desh | আপন দেশ

ইম্পেরিয়াল জাপানের শেষ পর্ব শোয়া যুগ

টোকিও বাংলা নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:১৪, ১ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ২২:১৪, ১ ডিসেম্বর ২০২১

ইম্পেরিয়াল জাপানের শেষ পর্ব শোয়া যুগ

ছবি:সম্রাট হিরোহিতো

জাপানের প্রথা অনুযায়ী সম্রাটদের শাসনামল শেষে বা মৃত্যুর পর প্রত্যেক সম্রাটের নতুন নামকরণ করা হয় এবং তার শাসনামলকে সেই নামেই ডাকা হয়। এভাবেই আসে এই ৩ টি নাম। মেইজি যুগ, যেখানে সম্রাট ছিলো মুতশুহিতো। তাইশো যুগে ছিলেন সম্রাট ইউশিহিতো। আর সবচেয়ে পরিচিত সম্রাট হিরোহিতোর শাসনামলের নাম শোয়া যুগ।

শোয়া যুগ-২য় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী

শোয়া যুগের সূচনা ১৯২৬ এ এবং এ যুগ শেষ হয় ১৯৮৯ সালে সম্রাট হিরোহিতোর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।এ যুগকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী। প্রথম ভাগকেই মূলত ইম্পেরিয়াল জাপানের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানে সম্রাটের উপস্থিতি থাকলেও জাপান আর সেই অর্থে ইম্পেরিয়াল থাকে নি।

শোয়া যুগের প্রথম পর্যায়ে জাপান পররাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সম্প্রসারণশীল নীতি গ্রহণ করে। ফলে সংঘটিত হয় চীন-জাপান যুদ্ধ ও রুশ-জাপান যুদ্ধ। দুটি যুদ্ধে জাপানের জয়লাভ দূরপ্রাচ্যে তাকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতাবান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৩১ সালে জাপান প্রথমে মাঞ্চুরিয়া পরে পুরো চীনকে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। বিনা প্রতিরোধে মাঞ্চুরিয়া কে পদানত করার পর জাপান পূর্ব এশিয়ায় তার বিস্তার নীতি শুরু করে। ১৯৩৭ এর দিকে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে জাপানের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়। সাংহাই, নানকিং, ক্যান্টন, পিকিং প্রভৃতি অঞ্চল জাপানি শাসনের আওতায় চলে আসে। ১৯৩৯ এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, জাপানি আগ্রাসনে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। কিন্তু তাদের আগ্রাসন বেশিদিন চলে নি। ৪৫ এর শেষের দিকে মিত্র দেশগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধের একপর্যায়ে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারামানবিক বোমা হামলার ঘটনায় ১৯৪৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর জাপান আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এর সাথেই শেষ হয় ইম্পেরিয়াল জাপানের পর্ব।

১৮৬৮ থেকে ১৯৪৫, এই দীর্ঘ সময়ে জাপান নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই জাপান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হয়ে ওঠে। তৈরি করে শক্তিশালী সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী। অর্থনৈতিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনে। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে সরে এসে শিপ্লভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ঝুকে পড়ে। এই সময়েই ইম্পেরিয়ায়ল জাপান পার্শবর্তী কোরিয়া, তাইওয়ান এবং চীনের মাঞ্চুরিয়াসহ নিকটবর্তী সকল দেশে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট হয়। কিন্তু ২য় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হার, তাদের সম্প্রসারণশীল নীতি পরিত্যাগে বাধ্য করে। এরপর জাপান তাদের প্রযুক্তি খাতে জোর দেয় এবং তারই সুফল হিসেবে জাপান আজ বিশ্বের প্রযুক্তি খাতের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়