
ছবি: সম্রাট ইউশিহিতো
এম্পায়ার অব জাপান অথবা ইম্পেরিয়াল জাপান শব্দগুলো শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার জাপানের ছবি। যেখানে সম্রাট হিরোহিতোর নেতৃত্ব জাপানী সৈন্যরা মুখে কালো আচড় কেটে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে। বিভিন্ন ম্যুভি, টিভি সিরিয়ালের বদৌলতে ইম্পেরিয়াল জাপান বলতে আমরা যুদ্ধবাজ জাপানকেই বুঝি। কিন্তু শুধু যুদ্ধ ছাড়াও জাপানের রয়েছে এক সমৃদ্ধ ইতিহাস। সেই ইতিহাসে যুদ্ধ যেমন রয়েছে তেমন রয়েছে অর্থনৈতিক উন্নতি, সামাজিক দায়বদ্ধতা, রাজনৈতিক টানাপোড়ন।
১৮৬৮ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত সময়কালকে ৩টি যুগে ভাগ করা হয়। ১৮৬৮ থেক ১৯১২ পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় “মেইজি” যুগ। এরপর আসে ১৯১২ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত চলা “তাইশো” যুগ। শেষে ১৯২৬ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত চলে “শোয়া” যুগের প্রথম পর্যায় বা ২য় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী শোয়া যুগ। জাপানের প্রথা অনুযায়ী সম্রাটদের শাসনামল শেষে বা মৃত্যুর পর প্রত্যেক সম্রাটের নতুন নামকরণ করা হয় এবং তার শাসনামলকে সেই নামেই ডাকা হয়। এভাবেই আসে এই ৩ টি নাম। মেইজি যুগ, যেখানে সম্রাট ছিলো মুতশুহিতো। তাইশো যুগে ছিলেন সম্রাট ইউশিহিতো।
তাইশো যুগ
তাইশো যুগের সময়কাল ১৯১২ সালে থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত। এসময় জাপানের সম্রাট ছিলেন সম্রাট তাইশো বা সম্রাট ইউশিহিতো। সম্রাট তাইশো ছিলেন গনতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই তার সময়ে জাপানের রাজ্যশাসনের ভার গুটিকয়েক ক্ষমতাশালী মানুষের কুক্ষিগত না থেকে রাজ্যের সাধারন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পরে। সেজন্য, এ যুগটিকে জাপানে “তাইশো গণতন্ত্র” নামে ডাকা হয়। জাপানের ইতিহাসে গনতন্ত্রের বীজ এই তাইশো যুগেই বপন করা হয়।
এ সময়ে জাপান একটি প্রকৃতপক্ষেই একটি প্রথম শ্রেণীর রাষ্ট্রে পরিণত হয়।তখন জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই চীনের বিশাল বাজার এর সুবিধা নিতে চেয়েছিলো।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের বাজারের অংশীদারিত্ব নিয়ে জাপান এক সম্মেলন করে।আপাতদৃষ্টিতে এই সম্মেলন জাপানের বিপক্ষে গেলেও প্রকৃতপক্ষে তা জাপানের জন্য সুফল বয়ে আনে।এই সম্মেলন দূরপ্রাচ্য যে শান্তির পরিমণ্ডল রচনা করে তাকে ব্যবহার করে জাপান অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সংহতি নিয়ে আসে ও আগ্রাসনের জন্য প্রস্তুত হয়।১৯২৭ সালের পর জাপানের রাজনীতিতে, শাসনব্যবস্থায় সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়। এই শামরিক শক্তিই জাপানকে মাঞ্চুরিয়া বিজয়ের পথে এগিয়ে দেয়।
আর সি