
প্রতিকী ছবি
মেহমানদারি অনুপম মানবিক গুণাবলির একটি। হজরত ইবরাহিম (আ.) ও পরবর্তী নবীদের সুন্নত এটি। আমাদের মহানবী (সা.) ছিলেন অতিথিপরায়ণতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এক সাহাবি মেহমানকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়ানোর জন্য চেরাগের সলতে ঠিক করার অজুহাতে তা নিভিয়ে দিয়েছিলেন, যেন নিজে না খেয়ে মেহমানকে খাওয়াতে পারেন; কারণ খাবার ছিল কম। এ ঘটনা জানতে পেরে মহানবী (সা.) বেশ খুশি হন এবং আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হয়ে আয়াত নাজিল করেন, ‘এবং তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, নিজেরা ক্ষুধার্ত থেকেও। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা এবং কামনা থেকে রক্ষা পেয়েছে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর: ০৯)
ইসলামের দৃষ্টিতে মেহমান ও মেজবানের কিছু কর্তব্য রয়েছে।
মেহমানের কর্তব্য হলো, বিশেষ কোনো অপারগতা না থাকলে দাওয়াত গ্রহণ করা। ধনী-গরিব সবার দাওয়াত সমান চোখে দেখা। নিজ থেকে খাবারের কোনো পদ ঠিক করে না দেওয়া। মেহমানের অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত কাউকে সঙ্গে না নেওয়া। যে খাবার উপস্থিত হয় কৃতজ্ঞতার সঙ্গে খাওয়া। খাবারের দোষ না ধরে যথাসম্ভব প্রশংসা করা। মেজবানের জন্য দোয়া করা। হাদিয়া-উপহার নিয়ে যাওয়া। পুরুষশূন্য বাড়িতে একা না যাওয়া। অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা। তিন দিনের বেশি অবস্থান না করা। রাত যাপনের ইচ্ছা থাকলে প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় ও জিনিসপত্র সঙ্গে নেওয়া ইত্যাদি।
মেজবানের কর্তব্য হলো আন্তরিকতার সঙ্গে দাওয়াত দেওয়া। লোক দেখানোর জন্য দাওয়াত না দেওয়া। মেহমান এলে খাবার দিতে দেরি না করা। মেহমানকে জোরাজুরি না করা। সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, ‘কেউ তোমার কাছে বেড়াতে গেলে খাবেন কি না প্রশ্ন কোরো না। খাবার সামনে হাজির করবে। তিনি খেলে তো খেলেন, না খেলে তুলে নেবে।’ মেহমান চলে যাওয়ার সময় তাকে এগিয়ে দিয়ে আসা ইত্যাদি।
লেখক: মুনীরুল ইসলাম, ইসলামবিষয়ক গবেষক