
ছবি: আপন দেশ
দুর্নীতিতে জর্জরিত দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত্ব উড়োজাহাজ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। দিন দিন অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ধীরে ধীরে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এরমধ্যে মিসর থেকে বোয়িং কোম্পানির দুটি উড়োজাহাজ লিজের নামে ১১শ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের একটি তদন্ত দল বিমান অফিসে অভিযান চালিয়েছে। দুদকের উপপরিচালক সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে অনুসন্ধান দলটি বিমান অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি জব্দ করেছে।
দুদক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে মিসরীয় উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার ক্ষেত্রে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার (মিসর) থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর নামে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে এটি সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। কিন্তু ওই ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়।
সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে। এতে বাংলাদেশ বিমানকে গচ্চা দিতে হয়েছে ১১শ কোটি টাকা। বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তদন্ত করে। তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উঠে আসায় বিষয়টি আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান করতে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে দুদকের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে দুদকের পক্ষ থেকে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য উপপরিচালক সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
দুদক সূত্র জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধান কমিটি গত ২৮ মে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে অনুসন্ধান টিম লিজ নেয়ার দরপত্রসহ অন্তত ১৩ ধরনের নথিপত্র অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সরবরাহের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিমানের পরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ট্রেনিং) এয়ার কমোডর (অব.) মো. মাহবুব জাহান খান বলেন, দুদকের দুজনের একটি দল বলাকায় গিয়েছিলেন। আমাদের সব তথ্য সংরক্ষিত আছে। লিজ নিয়ে এ ধরনের দুর্নীতি থেকে বিমান শিক্ষা নিয়েছে, এটা সবচেয়ে বড় কথা। এই ঘটনার পর বিমানের একটি লিজ গাইডলাইন হয়েছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল অভিযানের কথা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, লিজসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির রিপোর্টটি দুদকে পাঠানো হয়েছে। সেটি তদন্ত করতে দুদকের একটি টিম বলাকায় অভিযান চালিয়েছে। আমি এ সংক্রান্ত সব ধরনের নথি দুদক টিমকে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা দুদক টিমকে স্বাগত জানাই।