সংগৃহীত ছবি
১২ বছরের কম বয়সী শিশুকে ধর্ষণ করলে জ্বিনের আছর থেকে মুক্তি পায়ো যাবে, এমন কুসংস্কারের বলি হয়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭ বছরের এক শিশুকন্যা। ওই শিশুকে ধর্ষণ মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার দক্ষিণ খলেয়া কাহারটারী গ্রামের মেজবাউল হক ঘুটু (২৮), ঘুটুর বাবা আজহারুল ইসলাম (৫০) ও সূর্যিনা বেগম (২২)।
শনিবার সকালে (১১ জুন) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে নগরীর আলমনগরস্থ র্যাব-১৩ সদর দপ্তরে অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২ জুন স্কুলে যাওয়ার পথে ওই শিশুর সাথে দেখা হয় কাহারটারী এলাকার সূর্যিনা বেগমের। এ সময় টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সূর্যিনা স্কুলে শেষে ওই শিশুকে তার বাড়িতে আসতে বলে। স্কুল শেষে শিশুটি সূর্যিনার বাড়িতে যায়। এ সময় সূর্যিনা তাকে মোবাইল ফোনে গান শোনায়, অশালীন ছবি দেখানোসহ নানা গল্প-গুজব করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দুপুর আড়াইটার দিকে সূর্যিনার ঘরে প্রবেশ করে ওই শিশুকে ধর্ষণ করেন মেজবাউল হক ঘুটু। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলেও সূর্যিনা ও ঘুটুর বাবা আজহারুল এগিয়ে আসেনি। পরবর্তীতে সূর্যিনা ও আজহারুলের সহযোগিতায় ঘুটু ওই শিশুকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
রেজা আহমেদ ফেরদৌস জানান, বাড়িতে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে মাকে সবকিছু খুলে বললে শিশুটি। পরে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় ৪ জুন শিশুটির বাবা গঙ্গাচড়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে।
র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘুটু জানিয়েছে, তার ওপর জ্বিনের আছর ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা বিশ্বাস করতো। এজন্য ঘুটু স্থানীয় বিভিন্ন 'হাতুড়ি চিকিৎসক' ও কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করিয়েছেন। একজন কবিরাজ ঘুটুকে জানায়, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুকে ধর্ষণ করলে জ্বিনের আছর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ অপবিশ্বাস ও কুসংস্কারের ওপর ভিত্তি করে ঘুটু, তার বাবা ও সূর্যিনার সহযোগিতায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো হয়।
তবে এ বিষয়ে আরও অধিকর তদন্ত চলছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের গঙ্গাচড়া থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আপন দেশ/ আবা
